ঘুরে আসুন মধু কবির বাড়ি
ফারজানা ওয়াহিদ
সাগরদাঁড়ি! স্মৃতিময়, কেবলই মাইকেলের স্মৃতি বিজড়িত বলে নয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে চাইলেও আসতে পারেন সাগরদাঁড়ি। যেখানে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বড় হয়েছেন, লিখেছেন কবিতা, দেখেছেন স্বপ্ন। যে স্থান কবির হাতে কলম তুলে দেয়, সে স্থানটিতে একটিবার না বেড়িয়ে এলে যে অসম্পূর্ণই থেকে যাবে জীবনের খানিকটা অংশ। চলুন, সাপ্তাহিক ছুটির ফাঁকেই বেড়িয়ে আসা যাক মধু কবির বাড়ি।
ঐতিহাসিক নিদর্শন আর সঙ্গে অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য। এই নিয়েই বিখ্যাত সাগরদাঁড়ি অঞ্চলটি। সাগরদাঁড়ি যশোর জেলার কেশবপুর থানায় অবস্থিত। যেখানে রয়েছে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি। এখানে যাওয়ার পথে গাড়ি থেকে দুপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলো ফুটে উঠে,এক কথায় অবর্ণনীয়। মাঝে ফেরিতে করে পদ্মা নদী পার হওয়ার সময় মনে হবে যেন উত্তাল সাগর পারি দিচ্ছেন! মিনিট বিশেক সময় লাগবে নদী পার হতে। এরপর মাত্র 2 ঘণ্টার পথ যশোর শহর। অল্প খরচে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল মিলবে এখানে, কাজেই থাকার চিন্তা নেই। প্রাচীন এই শহরের পথঘাটের নামগুলো একটু ভিন্ন রকম। যেমন- এম কে রোড, আর কে রোড, গাড়িখানা রোড,আর এন রোড,চুরিপট্টি ইত্যাদি। এখানকার মার্কেট, জজকোর্ট, ক্যাথলিক গির্জা আর স্কুল-কলেজ মিলিয়ে গমগমে পরিবেশ ঢাকার কথা মনে করিয়ে দেবে। এবার কবির বাড়ি যাওয়ার পালা। ঢাকা থেকে সরাসরি কেশবপুরে যাওয়ার বাস আছে। কেশবপুর নেমে সাগরদাঁড়ি যেতে দরকার হবে হেলিকপ্টারের। না, ভড়কে ওঠার কিছু নেই, এই অঞ্চলে যাত্রীবাহী পরিবহন হিসেবে ব্যবহার্য মোটরসাইকেলকে এই নামেই ডাকা হয়। ভাড়া করতে পারেন রিকশাভ্যানও। তবে তাতে অনেক সময় লাগবে পৌছতে, দূরত্ব ১৫.৫০ কিলোমিটার। সাগরদাঁড়ির পথ কিছুটা আঁকাবাঁকা। পথের দুপাশের দৃশ্যগুলি চোখ জুড়ানোরমত। কবির বাড়িতে যাওয়ার পথে চোখে পড়বে একটি পর্যটন কেন্দ্র। পথিমধ্যে বিশ্রাম নিতে চাইলে কিংবা তথ্যের প্রয়োজন পড়লে থামতে পারেন এখানে। এমনকি রাতটাও কাটিয়ে দিতে পারেন। গেস্ট হাউজের ব্যব
স্থাও রয়েছে এখানে।
কবির বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। এখন মরা খাল বলা চলে। মহাকবি মাইকেল মধুসুধন দত্ত সহ অসংখ্যা জ্ঞানী গুনী মনিষীর জন্মস্থান কপোতাক্ষ তীরবর্তী অঞ্চল। কপোতাক্ষ নদের সেই ঐতিহ্য আজ বিলুপ্তির পথে। বিভিন্ন সময় সমাজ পতিসহ অসহায় দরিদ্রদের কপোতাক্ষের চর দখলের প্রতিযোগিতার ফলস্বরুপ শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়েছে আজ।
প্রতি বছর জানুয়ারির ২৫তারিখ থেকে ৩১তারিখ পর্যন্ত দেশের নামকরা একটি মেলা উদযাপিত হয়। যার নাম মধুমেলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে এই মেলা দেখতে।
প্রতিক্ষন/এডমি/এফজে










